Currently set to Index
Currently set to Follow
Latest Bangla Pdf

Tomar name sondha name Pdf by sadat hossen

book name: Tomar name sondha name (তোমার নামে সন্ধ্যা নামে)

 writter: Sadat hossen (সাদাত হোসেন)

Book type: PDF Download (পিডিএফ)

তোমার নামে সন্ধ্যা নামে pdf free download link & Review

‘তুমি কি ভাগ্যে বিশ্বাস করো?’

‘করি।’

‘কতোটা?’

‘উমমম…।’ বলে খানিক ভাবলো নীতু। তারপর বললো, ‘জানি না। তবে অনেকটাই মনে হয়।’

‘আর কো-ইনসিডেন্স?’

‘দুটো কি আলাদা?’

‘আলাদা না?’ পাল্টা প্রশ্ন করলো আকিব।

‘ঠিক জানিনা। তবে কো ইনসিডেন্স মানে যদি কাকতালীয় ঘটনা হয়, তাহলে সেটা ভাগ্যের থেকে আলাদা কেন হবে? দ্যাট শুড বি আ পার্ট অফ আওয়ার ফেইট।’

‘এই যে তোমার সাথে আমার এতোবছর পর এভাবে দেখা, এটা কি তবে? কো ইনসিডেন্স, না ভাগ্য?’

নীতু এবার হাসলো, ‘এসব কেন জিজ্ঞেস করছো?’

‘কারণ মাথায় একটা ভাবনা এসেছে।’

‘কী ভাবনা?’

‘ধরো, আমাদের জীবনে যখন হুটহাট কোনো অভাবনীয় ঘটনা ঘটে যায়। মানে যেটা আমাদের ভাবনায় ছিলোই না, তখন সেটা কি এমনি এমনিই ঘটে? না কি এর পেছনে বড়সড় কোন কারণ থাকে? বিশেষ কোন তাৎপর্য?’

‘তাৎপর্য মানে?’

‘এই ধরো কনসিকুয়েন্স বা পরিণতি। মানে সেই ঘটনাটা ঘটার পেছনে ভাগ্যের নিশ্চয়ই বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য থাকে? না হলে যেটা ঘটার কথাই না, কোনো সম্ভাবনাই ছিলো না, সেটা হঠাৎ কেন ঘটাবে ভাগ্য?’

নীতু আবারো হাসলো, ‘তুমি কি বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। একটু সহজ আর স্পষ্ট করে বলবে, প্লিজ?’

আকিব খানিক ভাবলো। তারা বসে আছে রিকশায়। আকাশে মস্ত চাঁদ উঠেছে। মাথা উঁচু করে সেই চাঁদের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলে এক ধরনের ঘোর লেগে যায়। সেই ঘোর সহসা কাটে না। মনে হয় চাঁদটা কপালের সাথে আটকে আছে। তাকে আর সেখান থেকে ছাড়ানো যায় না।

আকিব সেই চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর হঠাৎ বললো, ‘এই যে তোমার সাথে এতোবছর পরে এমন অদ্ভুতভাবে আবার আমার দেখা হয়ে গেলো। এটা কি অর্থহীন? এর কোনোই কনসিকুয়েন্স নেই?’

‘অর্থহীন কেন হবে? এই যে আমরা রোজ কত কত গল্প করছি। কী অসাধারণ সব সময় কাটাচ্ছি। এই যে রোজ তুমি আমায় এভাবে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসো। এই যাত্রাটুকুও যে কি ভীষণ সুন্দর, তুমি জানো?’

‘হুম জানি। কিন্তু সব যাত্রারই কিন্তু একটা গন্তব্য থাকে, তাই না?’

‘হুম, থাকে।’

‘তাহলে আমাদের এই যাত্রার গন্তব্য কই?’

আকিবের এই প্রশ্নে থমকে গেলো নীতু। সে তার স্বাভাবিক মেয়েলি সংবেদন থেকেই অনেক কিছু টের পায়। এই যে আকিব তাকে রোজ বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসে। খানিক মুখভার হলেই কারণ খুঁজতে তটস্থ হয়ে ওঠে। মন ভালো করার হাজারটা উপায় খুঁজতে থাকে। এসব যে স্রেফ বন্ধুত্বের অনুভবই নয়, এখানে যে তার চেয়েও বেশি কিছু আছে, নীতু তা জানে।

আকিব মানুষ হিসেবে দারুণ। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব তার। চারপাশের মেঘলা আকাশটাকে মুহূর্তেই ঝলমলে রোদে ভাসিয়ে দিতে পারে সে। নীতুর এই যে একটু একটু করে আবার নিজেকে ফিরে পাওয়া। বুকের ভেতর জমাট বেঁধে থাকা তীব্র যন্ত্রণার পিন্ডটাকে কিছুটা হলেও ভুলে গিয়ে আবার হাসতে পারা, এসবে আকিবের ভূমিকাও নেহাৎ কম নয়। আকিবের সাথে ঘণ্টার পর ঘন্টা কথা বলতে তার ভালো লাগে। সঙ্গ ভালো লাগে। এই যে প্রায় রোজ তারা রিকশায় বাড়ি ফেরে, এই সময়টুকুও যেন স্নিগ্ধ হাওয়ার স্পর্শের মতো। কেমন মোলায়েম, ফুরফুরে, মন ভালো করে দেওয়া আশ্চর্য এক অনুভব ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু আকিবের এই প্রশ্নের উত্তরে কী বলবে নীতু?

আকিব বললো, ‘বললে না?’

‘কী?’

‘আমাদের এই যাত্রার গন্তব্য কই?’

‘নামহীন কোন গন্তব্যে।’

‘সব গন্তব্যেরই কিন্তু নাম থাকে। হয়তো পথিকের কেবল নামটা জানা থাকে না।’

‘আমাদেরও হয়তো জানা নেই।’

‘কিন্তু আমি যে জানতে চাই।’

‘আমি চাই না।’ অস্ফুটে বললো নীতু।

‘কেন?’

‘আমার ভয় হয়। ধরো মৃত্যু অনিবার্য, সেটা জেনেও কিন্তু আমরা আগামীকালের আশায় বাঁচি। কিন্তু আগামীকালই নিশ্চিত মৃত্যু, এটা জানলে সেই আশাটা আর থাকে না। বেঁচে থাকার বাকী সময়টুকু মৃত্যু তখন গ্রাস করে নেয়।’

‘আমাদের এই সম্পর্কের গন্তব্যে কী মৃত্যুর মতো ভয়াবহ কিছু অনিবার্য?’

‘সব সম্পর্কের শেষেই মৃত্যু থাকে। কিছু মৃত্যু দেখা যায়, কিছু দেখা যায় না।’

কথাটা বলতে গিয়ে নীতুর গলাটা কি খানিক কাঁপলো? আকিব হঠাৎ হাত বাড়িয়ে নীতুর কাঁধে হাত রাখলো। তারপর তাকে টেনে আনলো নিজের কাছে। নীতু এলোও। তবে খানিক আড়ষ্ট হয়ে রইলো যেন। আকিব জানে, এই আড়ষ্টতাটুকু সে কাটিয়ে দিতে পারবে। সেদিনও এমনই আকাশে চাঁদ থাকবে। এমন মন কেমন করে দেয়া উদাসী হাওয়া। এমন রিকশায় নীতু সেদিন তার কাঁধে মাথা রেখে অপলক তাকিয়ে থাকবে। সেদিন সে বুক ভরে তার উত্তাপ ও সুবাস শুষে নিতে থাকবে।

নীতু বললো, ‘গন্তব্যহীন যাত্রাও কিন্তু হয়। ধরো, এই যে আমি, আমার কিন্তু কোথাও যাওয়ার নেই। আমার এই জীবন গন্তব্যহীন এক যাত্রাই।’

‘এমন করে কেন বলছো?’

‘কী জানি!’ বলে দীর্ঘশ্বাস ফেললো নীতু। আকিব তাকিয়ে রইলো। নীতুর ওই দীর্ঘশ্বাসের কারণটাই এখনো জানে না সে।

কী এমন দুঃখ তার?

রিকশা থেকে নামার সময় আকিব ইচ্ছে করেই হাত বাড়িয়ে দিলো। নীতু শক্ত করে হাতটা ধরলো। ওই স্পর্শটুকু কী যে ভালো লাগে আকিবের। মনে হয় বুক পকেটে যত্ন করে ওই স্পর্শটুকু যদি সে জমা করে রেখে দিতে পারতো! তাহলে যখন তখন ইচ্ছে হলেই আলগোছে বের করে ছুঁয়ে দিতে পারতো!

~ ‘তোমার নামে সন্ধ্যা নামে’ ডাউনলোড লিংক

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!