সানজাক ই উসমানি pdf download
|

Sanjak e usman bangla pdf ebook & Review

বইঃ সানজাক-ই উসমান
লেখক: প্রিন্স মুহাম্মদ সজল
ক্যাটাগরীঃ ইতিহাস ও থ্রিলারধর্মী
গার্ডিয়ান প্রকাশনী

Direct ebook link : –  Link :-1 | Link :-2 | Link :-3Link :-4Link :-5Link :-6

সানজাক-ই উসমান বুই রিভিউঃ

বইয়ের শুরুতেই লেখক বলেছেন,
“পৃথিবীতে তিন ধরনের ভালো বই আছে।প্রথম ধরনের বই আপনাকে আনন্দ দেবে, পড়বেন,ভালো লাগবে, তারপর ভুলে যাবেন।
দ্বিতীয় ধরনের বই আপনাকে জীবন নিয়ে ভাবতে শেখাবে। আর তৃতীয় ধরনের বই, আপনার জীবনটাকে বদলে দেবে।”

সেই অর্থে সানজাক-ই উসমান বইটি কোন শ্রেণীতে পরে আমার জানা নেই।প্রথমত,যাদের ইতিহাসের ভৌগোলিক নাম,উপনাম,ভৌগোলিক পরিভাষা,নৃতাত্ত্বিক পরিভাষা,রাজনৈতিক পরিভাষা সম্পর্কে জানাশোনা কম তাদের জন্য লেখক মূল লেখা শুরুর আগেই একটি তালিকা দিয়েছেন। যার ফলে মূল পড়া পড়ায় ভোগান্তি পেতে হবে না। স্তেপ কী?তুর্কিস্তান কোথায়? মাগরেব বলে? তাতার বা কিপচাক কারা? মামলুক বা সেলজুক কাদের বলা হয়? এসব পরিভাষা বুঝার জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছেন।

ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুতেই মঙ্গোলিয়ান স্তেপ থেকে যেন স্বয়ং আজরাইল হয়ে নেমে এলেন চেঙ্গিজ খান এবং তার মোঙ্গল বাহিনী। মাত্র ২০ বছরের ভেতর যেন নরকে পরিণত হলো সারা পৃথিবী। প্রথমে চীন, তারপর তুর্কিস্তান আর খোরাসান হয়ে মোঙ্গলঝড় ধেয়ে এলো ককেশাস, আনাতোলিয়া দিয়ে রাশিয়া আর হিন্দুস্তানের দিকে। মরে সাফ হয়ে গেল কোটি কোটি মানুষ।

ইতিহাসের জঘন্যতম খুনি মোঙ্গল বীর চেঙ্গিজ খান সাড়ে চার কোটি মানুষকে হত্যা করে,প্রতিটি রাজ্য ধ্বংস করে মানুষের কাটা মাথা দিয়ে প্রবেশদ্বারে পিরামিড বানানোর নির্মম কাহিনী রচিত হয়েছে।হিটলার ৫০ লাক্ষ ইহুদি হত্যা করেছিলো। কিন্তু চেঙ্গিস খান ৫ টি রাজ্যে ৬০ লক্ষের অধিক হত্যা করে।হিটলার,মুসোলিনি,স্টালিন এর সম্মিলিত হত্যা হিসাব করলেও চেঙ্গিস খানের সমান হবে না।
আগ্রাসী ধ্বংস এতোটাই পরিকল্পিত ছিল;হত্যাকাণ্ড,ধর্ষণ এতোটাই বিভৎস ছিল যে মোঙ্গলদেরকে সবাই ‘ইয়াজুজ মাজুজ’ ভেবে নিয়েছিল।

হালাকু খান কর্তৃক তৎকালীন পৃথিবীর অনেক বড় লাইব্রেরি’বায়তুল হিকমাহ’ ধ্বংস।প্রাচীন ও মধ্যযুগের জ্ঞান বিজ্ঞানের এক সংগ্রহশালা ছিলো বাগদাদের “বায়তুল হিকমাহ”।তৎকালীন পৃথিবীর প্রতি ১০ টি আবিষ্কৃত বইয়ের ৯ টি সেখানে পাওয়া যেতো। বাগদাদ কোন সাধারণ শহর ছিলো না ;মুসলিম সভ্যতার ও খিলাফতের প্রতীক ছিলো।মধ্যযুগের বিজ্ঞান ও উৎকর্ষের প্রতীক।বায়তুল হিকমাহ ধ্বংসে বাগদাদের পতনে প্রাণহানি হয় ২-১০ লাখের মাঝামাঝি।ফোরাত নদীর পানি প্রথমে মানষের রক্তে লাল হয়,পরে কালো হয় বায়তুল হিকমাহর পুড়ে যাওয়া বইয়ের ছাইয়ে।ভাবা যায়! বইটা পড়ে বায়তুল হিকমাহ সম্পর্কে জানার কৌতূহল দ্বিগুন বেড়ে যাবে।

মোঙ্গলদের যখন সারা জাহানে ত্রাসের রাজত্ব তখন আনাতলিয়ার বুরসা অঞ্চলে আরতুরুল বে এর পুত্র উসমান নিজেকে ধীরে ধীরে গড়ে তুলতে থাকেন।এই উসমানই উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।যে সাম্রাজ্যকে পশ্চিমারা অটোমান বলে।উমাইয়া এবং আব্বাসীয় শাসনের পর মুসলমানরা যখন মোঙ্গলদের তলোয়ারের নিচে কচুকাটা হচ্ছিল তখনই তুর্কি অটোমানরা মুসলমানদের নতুন জীবন দিতে থাকে।

অটোমান তথা মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন হলো কনস্টান্টিনোপল বিজয়।স্বয়ং রাসূল (স:) কনস্টান্টিনোপল বিজয়ের ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন। অতীতে দুইবার বড় ধরনের অভিযান চালালেও কনস্টান্টিনোপল জয় সম্ভব না হলেও ১৪৫৩ সালে অটোমান সুলতান মুহাম্মদ আল ফাতিহ সেটা সম্ভব করেন।হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে কনস্টান্টিনোপল জয় করার পর পৃথিবীর চেহারাই পাল্টে যায়।

বড় বড় ঘটনার পাশাপাশি অনেক ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার লোহমর্ষক তথ্য পাঠক পাবেন এই বই থেকে।যেমন ইউরোপে প্লেগের মহামারী, মসলা নিয়ে রাজনীতি, জানিসারি বাহিনীর ক্ষিপ্রতা,ভার্না হ্রদের যুদ্ধ,কমান্ডার জন ও শয়তানের ছেলে ড্রাকুলার।ইতিহাস কুখ্যাত পিশাচ ড্রাকুলা।একদিন শয়তানকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল তার নিষ্ঠুরতা।মৃত মানুষের রক্তে পাউরুটি ভিজিয়ে খাওয়া ছিলো তার নেশা।
১৪৫৬-১৪৬২ এই ৬ বছরে প্রায় ১ লাখ মানুষ মেরেছিলো ড্রাকুলা।বাচ্চাদের পুড়িয়ে রোস্ট করে মায়েদের খেতে বাধ্য করতো। বইটা কল্পনাকেও হার মানিয়ে এগিয়েছে।

চেঙ্গীস খান!এশিয়ার প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষকে খুন করেছে সে এবং তার বংশধররা।মধ্যপ্রাচ্য,মধ্য এশিয়া ও উত্তর চীনের ডেমোগ্রাফি পুরোপুরি বদলে দেয় তারা।বর্তমান মানবসংখ্যার ০.৫% তার বংশধর।পৃথিবীর সবচেয়ে সফল বায়োলজিক্যাল ফাদার সে!

মোঙ্গলদের হাত থেকে অটোমানরা কী করে গড়ে তুলল বিশাল এক সালতানাত? মোঙ্গলদের হাত থেকে তারা কিভাবে বাঁচালো মক্কা-মদিনাকে?

‘আপনি ইতিহাসের কয়জন সিরিয়াল কিলারকে চেনেন?ইতিহাসের ভয়ংকরতম খুনীদের সাথে কি আপনার দেখা হয়েছে??’এমন হাজারো প্রশ্নের সমাধান পেতে বইটি আপনাকে সাহায্য করবে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *