সালমান রুশদি এর সকল বই Pdf Download (অনুবাদ)
All translated Books of Salman Rushdie bangla PDF | সালমান রুশদির কবিতা বইগুলোর পিডিএফ ডাউনলোড লিংক:
সালমান রুশদি ও মিছিলের রাজনীতি pdf
স্যাটানিক ভার্সেস বাংলা pdf download – link
মিডনাইটস চিলড্রেন বাংলা pdf : download
সালমান রুশদি বই রিভিউ
ভেবেছিলাম এই লেখকের বই কিনব, যেহেতু তার লেখা আগে পড়ার সুযোগ হয়নি। কিন্তু ভূমিকা পড়ে দারুণভাবে হতাশ হলাম। উনি যে ‘গৃহপালিত’ ইসলামের পরিচয় তুলে ধরেছেন তা মোটেও ইসলামের মূল পরিচয় না।
এখানে শুধু বইটির ভূমিকায় যে বিষয়গুলো ইসলামের ভয়ানক বিকৃতি সেগুলো তুলে ধরছি।
১. ‘”খোদার সৈনিক”, “বিশ্বের তত্ত্বাবধায়ক”, “আল্লাহর খলিফা” এই হলো লেখক আর বক্তাশ্রেণির মুসলিমদের কাছে নিজেদের পরিচায়ক শব্দ।’
শব্দগুলো নাকি আক্ষরিক অর্থেও অনৈসলামিক! অথচ এসব কুরআনের শব্দ, কুরআনিক পরিচয়! (২:৩০; ৫৮:২২)। প্রশ্ন আসে, তাহলে মুসলিমরা কার সৈনিক, কার খলিফা? শয়তানের? পক্ষ তো শুরু থেকে দুটোই হয়ে এসেছে, হয় আল্লাহর, নয় শয়তানের।
২. লেখক এই আয়াত কোট করেছেন, যা নবিজিকে খেতাব করে আল্লাহ বলেছেন: ‘আপনি শুধু উপদেশদানকারী, তদারক বা নিয়ন্ত্রক নন’। ঠিকই তো! জোর করে কাউকে ইসলামে ঢোকানো হারাম। এই আয়াত কি আগের শব্দগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক? লেখক দুটোকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করালেন কেন? এই আয়াতের মর্ম হচ্ছে, আপনি তাদের এমন শাসক নন যে তাদেরকে আপনার মুমিন বানাতেই হবে।
আর এই আয়াত দ্বারা যদি ‘মুসলিমদের শাসক পরিচয়’কে রদ করা হয়, তা হলে নবিজি (সা.) কেন সাহাবিদের রোম-পারস্য জয়ের সুসংবাদ শোনালেন, কেন কনস্টান্টিনোপল-জয়ী বাহিনী ও তার সেনাপতির প্রশংসা করলেন? সাহাবিরা কেন একেকটা দেশের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন: ‘ইসলাম কবুল করো, না-হয় জিযিয়া দিয়ে থাকো, না-হয় তরবারি দিয়ে মোকাবেলা করো’? মনে হচ্ছে লেখক এই আয়াতের মর্ম নবিজির (সা.) চেয়েও বেশি বুঝেছেন। আরেকটু কঠিন করে বললে, নিজের মতো বুঝে অপব্যাখ্যা করেছেন।
৩. অবশ্য তিনিই উলটো বলছেন: ‘বর্তমান মুসলমানরা কার্যত আয়াতটি পুরোই উলটে দিয়েছে। তারা মনে করছে, আমাদের কাজ স্রেফ ওয়াজ-নসিহত করা নয়, বরং নিয়ন্ত্রক বনে গিয়ে দারোগাগিরি করাও’।
জোর করে কাউকে ইসলামে ঢোকানো হারাম, এটা আগেই বলা হয়েছে। দারোগাগিরি বলতে লেখক যদি জোর করে ইসলামে ঢোকানো বোঝান তা হলে ঠিক আছে, ওটা মুসলিমদের দায়িত্ব না। কিন্তু এখানেও প্রশ্ন আসে, তা হলে মুসলিমদের কাজ কি শুধু ওয়াজ-নসিহত করা?! তা হলে সাহাবিরা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে ছুটে গেলেন কেন? শুধু মক্কা-মদিনায় লেখকের কথিত ‘দাওয়াতি’ কাজ করতেন! আবারও প্রশ্ন আসে, ইসলামকে কারা বেশি বুঝেছিল, নবিজির (সা.) হাতে গড়া শিষ্যরা, নাকি লেখক ও তার মতাদর্শীরা?
আরেকটি প্রশ্ন আসে যে, তা হলে দারোগাগিরির দায়িত্বটা উনি কার হাতে দিতে চান!? শয়তানের হাতে?
৪. লেখকের আরেকটি বড়ো সমস্যা হলো, সমগোত্রীয় দুটি বিষয়কে প্রতিপক্ষ ও সাংঘর্ষিক হিসেবে দেখানো; অথচ বাস্তবে তার একটি অপরটির পরিপূরক, প্রতিপক্ষ মোটেও নয়। ভূমিকাতে লেখক মোটাদাগে ‘দাওয়াত ও রাজনীতি’কে প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখিয়েছেন। যেন ইসলাম একটাতেই সীমাবদ্ধ। এটি তার চিন্তার সংকীর্ণতার বহিঃপ্রকাশ। মুসলিমরা দায়ী ও অন্য সবাই মাদউ’, একইসঙ্গে তারা এই জগতের তত্ত্বাবধায়কও। মুসলিমরা ‘সাক্ষী’ (২:১৪৩), একইসঙ্গে ‘খলিফাও’। এই ধরনের দুটি মহান পরিচয়ের একটিকে অপরটির বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা কেন?
হ্যাঁ, দাওয়াতি ক্ষেত্রে মুসলিমদের কিছু অদূরদর্শীতা আছে, কিন্তু সেটার সমালোচনা করতে গিয়ে আপনি কোন ইসলামের চিত্র আঁকলেন? এখন তো ‘দাওয়াতি কাজ’ বলতে আসলে কী বোঝাচ্ছেন তা-ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। আপনার ইসলাম কি শয়তানের হাতে ক্ষমতার চাবিকাঠি তুলে দিয়ে তার ছায়াতলে বসে কিছু প্রথাপালনের নাম? নবিজি (সা.) আমাদের কাছে এই ইসলাম রেখে যাননি। কুরআনের একটি আয়াত দিয়ে শেষ করছি। আল্লাহ তাআলা বলেন:
‘তিনি ওই সত্ত্বা যিনি পাঠিয়েছেন তার রাসুলকে হেদায়েত ও সত্যধর্ম দিয়ে, যেন তিনি এটিকে বিজয়ী করে দেন সমস্ত ⁽বাতিল⁾ ধর্মের ওপর; যদিও মুশরিকরা ⁽তা⁾ অপছন্দ করে। ৬১:৯।