ম্যাসেজ মিজানুর রহমান আজহারি Pdf

বইঃ ম্যাসেজ মিজানুর রহমান Pdf ebook

ম্যাসেজ আধুনিক মননে দ্বীনের ছোঁয়া Pdf ebook

বইয়ের সূচিপত্র:

  • কুরআনের মা
  • মুমিনের হাতিয়ার
  • কুরআনিক শিষ্টাচার
  • উমর দারাজ দিল।
  • ডাবল স্ট্যান্ডার্ড
  • উসরি ইউসরা : কষ্টের সাথে স্বস্তি
  • রেগে গেলেন তাে হেরে গেলেন
  • শাশ্বত জীবনবিধান
  • স্মার্ট প্যারেন্টিং
  • মসজিদ : মুসলিম উম্মাহর নিউক্লিয়াস
  • ঐশী বরকতের চাবি
  • বিদায় বেলা

মীলাদুন্নবী (ছাঃ)-এর অনুষ্ঠান

অতঃপর আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর জন্ম উপলক্ষে মীলাদ অনুষ্ঠান করা, তাতে কিয়াম করা, রাসূলকে সালাম দেওয়া এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক যে সকল ব্যাপার সাধারণতঃ মীলাদ মাহফিলে করা হয়ে থাকে সে সম্পর্কে বহুবার প্রশ্ন এসেছে। এর জওয়াবে কেবল এতটুকুই বলা যেতে পারে যে, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এবং অন্য কারু জন্ম উপলক্ষে কোনরূপ অনুষ্ঠান করা শরী’আতে জায়েয নয়। কেননা তা হ’ল শরী’আতের মধ্যে নবােদ্ভুত বিষয় সমূহের অন্যতম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) নিজে তা করেননি, তার খুলাফায়ে রাশেদীনও করেননি এবং রাসূলের অন্যান্য ছাহাবী ও তাবেঈগণও তা কখনােই করেননি। অথচ তারাই ছিলেন সুন্নাতে নববী সম্পর্কে দুনিয়ার সকল মানুষের চাইতে বেশী ওয়াকিফহাল, রাসূলের মহব্বতে সর্বাগ্রগণ্য এবং তাঁর সুন্নাত ও শরী’আতের একনিষ্ঠ অনুসারী। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, -, * যে ব্যক্তি আমাদের শরী’আতে এমন কিছু নতুন সৃষ্টি করল, যা তার মধ্যে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত। অন্য হাদীছে বলা হয়েছে, منه فهو رد ) من أحدث في أمرنا هذا ما ليس عليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين المهديين من بعدي، تمسكوا بها وعضوا عليها بالنواجذ وإياكم ومحدات الأمور فإن كل محدثة بدعة وكل بدعة ضلالة – رواه أحمد وأبو داود والترمذي وابن ماجه –

‘তােমাদের উপর পালনীয় হ’ল আমার সুন্নাত ও আমার হেদায়াতপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাত। তােমরা তা কঠিনভাবে আঁকড়ে ধর এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে ধর। আর ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি হতে সাবধান! নিশ্চয়ই প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদ’আত ও প্রত্যেক বিদ’আতই ভ্রষ্টতা’। উপরােক্ত হাদীছ দু’টিতে বিদ’আতের প্রবর্তন ও তার অনুসরণের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। আল্লাহ রব্বল আলামীন বলেছেন, ৫ ও ৬, ১১ ও, -(V LI) – ‘আর রাসূল তােমাদের নিকট যা নিয়ে আসেন, গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাক’ (হাশর ৫৯/৭)।

Message Mizanur Rahman Azhari pdf ebook free

তিনি বলেন, যারা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর আদেশ-নিষেধের বিরােধিতা করে তারা যেন এ বিষয়ে ভয় করে যে, তাদেরকে (দুনিয়াবী জীবনে) গ্রেফতার করবে নানাবিধ ফিত্না এবং (পরকালীন জীবনে) গ্রেফতার করবে মর্মান্তিক আযাব’ (নূর ২৪/৬৩)। তিনি বলেন, لقد كان لكم في رسول الله أسوة لمن كان يرجو الله واليوم الآخر وذكر الله كثيرا- (الأحزاب ۲۱)۔ “ নিশ্চয়ই তােমাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ নিহিত রয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতকে কামনা করে এবং আল্লাহকে বেশী বেশী স্মরণ করে’ (আহযাব ৩৩/২১)। তিনি বলেন, والسابقون الأولون من المهاجرين والأنصار والذين اتبعهم بإحسان، رضي الله عنهم ورضوا عنه وأعد لهم جنات تجري تحتها الأنهار خالدين فيها মুহাজির ও আনছারগণের মধ্যে যারা অগ্রবর্তী এবং যারা পরবর্তীতে নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসারী হয়েছে, আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। আর আল্লাহ তাদের জন্য এমন উদ্যান সমূহ প্রস্তুত করে রেখেছেন। যার তলদেশ দিয়ে নদী সমূহ প্রবাহিত। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। আর এটাই হ’ল মহান সফলতা’ (তওবা ৯/১০০)।

তিনি বলেন, i ‘আজকের দিনে আমি তােমাদের জন্য আমার প্রদত্ত দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম ও তােমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহকে সম্পূর্ণ করলাম এবং তােমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসাবে মনােনীত করলাম’ (মায়েদাহ ৫/৩)। এই মর্মে আরও বহু আয়াত রয়েছে। অতঃপর এই সকল জন্ম দিবস সমূহের প্রবর্তন হতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তা’আলা তাঁর দ্বীনকে উম্মতের জন্য পূর্ণাঙ্গ করে দেননি এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-ও উম্মতের জন্য করণীয় অনেক কিছু পুণ্যপন্থা আমাদেরকে বাৎলে দিয়ে যাননি, যার জন্য পরবর্তীকালে কিছু ব্যক্তি আল্লাহ প্রদত্ত শরী’আতের মধ্যে তাঁর অনুমতি ছাড়াই পুণ্যের নামে নতুন কিছু অনুষ্ঠানের উদ্ভব ঘটিয়ে ভেবে নিলেন যে, এর দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল করা সম্ভব হবে। নিঃসন্দেহে এর মধ্যে বিরাট গুনাহ নিহিত রয়েছে এবং এটা স্বয়ং আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের শামিল। অথচ মহান আল্লাহ তাঁর বান্দার জন্য দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ এবং এই নেমতকে সম্পূর্ণ করে দিয়েছেন। আর মহান রাসূল (ছাঃ) উক্ত দ্বীনকে তাঁর উম্মতের নিকট পুরাপুরিভাবেই পৌছে দিয়েছেন। মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার ও জাহান্নাম হ’তে পরিত্রাণ পাওয়ার কোন পথ-পন্থাই তিনি বলতে বাকী রেখে যাননি। যেমন ছহীহ হাদীছে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) প্রমুখাৎ বর্ণিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন যে, ما بعث الله من یئ إلا كان حقا عليه أن يدل أمته على خير ما يعلمه لهم – aaj A., প্রত্যেক নবীর উপর এটি অপরিহার্য করা হয়েছে যে, তিনি তাঁর উম্মতের নিকট আল্লাহর নিকট হতে আনীত যাবতীয় পুণ্যপথসমূহ বালিয়ে দিবেন এবং তাদেরকে যাবতীয় অন্যায় পথ সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিবেন।

অতঃপর এটা সকলের জানা বিষয় যে, আমাদের নবী (ছাঃ) দুনিয়ার সেরা নবী ও শেষনবী। তাই দ্বীনের সকল কথা উম্মতের নিকট পৌছানাের ব্যাপারে ও উপদেশ দানের ব্যাপারে তিনি সবার ঊর্ধ্বে। এক্ষণে যদি মীলাদ অনুষ্ঠান ধর্মীয় বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত হ’ত, যদ্বারা আল্লাহ খুশী হন, তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) এই ব্যাপারটি তাঁর উম্মতের নিকট বলে যেতেন অথবা তিনি নিজ জীবনে করে যেতেন কিংবা তাঁর ছাহাবীগণ করতেন। কিন্তু এরূপ কোন কিছুই যখন ঘটেনি তখন বুঝতে হবে যে, এটা ইসলামের মধ্যকার কিছুই নয় বরং তা সেই বিদ’আত সমূহের অন্ত ভুক্ত, যে সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাঁর উম্মতকে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে গিয়েছেন। যা পূর্বোক্ত দু’টি হাদীছ ছাড়াও উক্ত মর্মের বহু হাদীছে তিনি বলেছেন। এতদ্ব্যতীত জুম’আর খুৎবায় তিনি বলতেন,    ; ২. t الحديث كتاب الله وخير الهدي هدي محمد وشر الأمور مخدائها وكل -~~~ ,

‘সর্বোত্তম হাদীছ হ’ল আল্লাহর কিতাব ও সর্বোত্তম হেদায়াত হ’ল মুহাম্মাদের হেদায়াত এবং সবচাইতে নিকৃষ্ট কর্ম হ’ল শরী’আতের মধ্যে নতুন নতুন অনুষ্ঠানের উদ্ভব ঘটানাে। আর প্রত্যেক বিদআতই ভ্রষ্টতা’।

এ প্রসঙ্গে অসংখ্য আয়াত ও হাদীছ রয়েছে। আলেমদের একটি বিরাট দল পূর্বোক্ত দলীল সমূহ ও অন্যান্য দলীলাদির প্রতি আমল করে প্রচলিত মীলাদ অনুষ্ঠানের প্রকাশ্য বিরােধিতা করেছেন ও তার পরিণতি সম্পর্কে উম্মতকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। পরবর্তীকালে কিছু বিদ্বান এটাকে জায়েয রেখেছেন, যদি তার মধ্যে ধর্মীয় নীতি বিরােধী কোন অপকর্ম না হয়। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর প্রশংসায় অতি বাড়াবাড়ি, নারী-পুরুষের সম্মিলন, বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার ইত্যাদি। তারা ধারণা করেন যে, মীলাদ হ’ল একটি বিদ’আতে হাসানাহ’ (উত্তম বিদ’আত)।

অথচ শরী’আতের মূলনীতি ( 56&ll) আমাদেরকে আমাদের বিতর্কিত বিষয় সমূহের মীমাংসার জন্য আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রাসূলের সুন্নাতের প্রতি ধাবিত হতে বলে। যেমন কুরআনে বলা হয়েছে, یا ایها الذين آمنوا أطيعوا الله وأطيعوا الرسول وأولي الأمر منكم فإن تنازعتم في شيء فردوه إلى الله والرسول إن كنتم تؤمنون بالله واليوم الآخر ذلك -( – ‘হে বিশ্বাসীগণ! তােমরা আনুগত্য কর আল্লাহ্র এবং আনুগত্য কর আমার রাসূলের ও তােমাদের নেতৃবৃন্দের। যদি তােমরা কোন বিষয়ে বিবাদ কর, তাহলে বিষয়টিকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে দাও। যদি তােমরা সত্যিকারভাবে আল্লাহ ও আখেরাতের উপরে বিশ্বাসী হও।

আর এটাই তােমাদের জন্য কল্যাণকর ও পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম’ (নিসা ৪/৫৯)। আল্লাহ অন্যত্র বলেন, , আর তােমরা যেসব বিষয়ে মতভেদ কর, তার ফায়ছালা তাে কেবল আল্লাহ্র নিকট’ (শূরা ৪২১০)। (এবারে আসুন মাননীয় পাঠক!)

মীলাদ মাহফিলের এই বিতর্কিত মাসআলাটি নিয়ে আমরা প্রথমে আল্লাহর কিতাবের শরণাপন্ন হই। সেখানে আমাদেরকে রাসূলের প্রতিটি নির্দেশের অনুসরণ ও নিষেধ হতে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে এবং এটাও দেখছি যে, আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে এই উম্মতের জন্য পূর্ণ করে দিয়েছেন। অথচ উক্ত মীলাদ মাহফিল রাসূলের আনীত সেই দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয় যে দ্বীনকে আল্লাহ আমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন এবং যে ব্যাপারে আমাদেরকে রাসূলের অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অতঃপর আসুন রাসূলের সুন্নাতের দিকে। সেখানে দেখছি যে, না রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তা কখনও করেছেন, না কাউকে করার হুকুম দিয়েছেন, না তাঁর ছাহাবীগণ তা করেছেন। অতএব আমরা নিঃসন্দেহে বুঝতে পারি যে, তা দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয়; বরং নবােদ্ভুত বিষয় সমূহের অন্যতম এবং তা হ’ল ইহুদী ও খৃষ্টানদের ধর্মীয় উৎসবসমূহের অনুকরণ মাত্র।

message mizanur rahman azhari pdf book free ebook link: click here

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *