Humayun Ahmed all pdf book free download
এই শুভ্র এই Pdf Download – ei shuvro ei by Humayun Ahmed Pdf
In this post, i will provide ei shuvro ei by Humayun Ahmed Pdf file free download link.
বইঃ এই শুভ্র! এই
লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ
প্রকাশনাঃ অন্যপ্রকাশ
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ
প্রকাশকঃ মাজহারুল ইসলাম
মূল্যঃ ৮৫টাকা
এই শুভ্র! এই বই রিভিউঃ
‘এই শুভ্র এই’ বইটি শুভ্র সমগ্রের একটি। শুভ্র সমগ্রে মোট ৬টি বই রয়েছে তার মধ্যে ‘এই শুভ্র এই’ বইটি ৫-নাম্বারে, যা প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে।
শুভ্র সম্পর্কেঃ
শুভ্র, যার অর্থই হয় বিশুদ্ধ, স্বচ্ছ, খাঁটি। শুভ্র তার নামের মতই বিশুদ্ধ একজন মানুষ। একশো ভাগ শুদ্ধ মানুষ কি আছে? হয়তো নেই। কিন্তু লেখকরা হয় কল্পনাবিলাসী। তারা তাদের অনুভূতির ডানায় পাখা মেলে নানা কল্পনা এঁকে যান।
হুমায়ুন আহমেদের কল্পনায় আঁকা এমনই একটি চরিত্র হলো শুভ্র। মানুষের ভেতরকার নিষ্পাপ সত্ত্বাকে নিয়ে তৈরি করেছেন শুভ্র।
শুভ্র হুমায়ূন আহমেদের ব্যতিক্রমধর্মী এক চরিত্র। যে পৃথিবীর সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্ত।
যে বই পড়তে ভালোবাসে। এবং তার চোখের সমস্যার কারণে সে যতবেশি পারে বই পড়ে নিতে চায়। কারণ, সে অন্ধ হয়ে যাবে।
একজন পাঠক যখন শুভ্র পড়েন তখন তিনি উপলব্ধি করেন তার মাঝেও একটা শুভ্র বাস করে। কিন্তু বাস্তবতার অজুহাতে, বেঁচে থাকার তাগিদে কিংবা নিছক লোভে পড়ে সেই শুভ্রকে ধীরে ধীরে অন্ধকার কালো ঘিরে ফেলে।
লেখক সম্পর্কেঃ
জন্ম- ১৯৪৮, ১৩ নভেম্বর
মৃত্যু- ২০১২, ১৯ জুলাই
হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন সব লেখক থেকে বিচিত্র এক লেখক। সকল লেখকই অন্য লেখক থেকে বিচিত্র তবে হুমায়ুন আহমেদকে সেদিক থেকে একটু বেশিই বলা চলে। তার লেখা নিয়ে ব্যাক্তিজীবনে নানা সমালোচনার পরও তিনি লিখে গিয়েছেন। কারণ, তিনি তার লেখায় বিশ্বাসী ছিলেন। আর সেই বিশ্বাসেই তার লেখা দিয়ে মন জয় করেছে লক্ষ্যাধিক পাঠকের।
তার গড়ে তোলা প্রতিটি চরিত্রই সাহিত্যে ভিন্নমাত্রা দিয়েছে। ভিন্ন স্বাদ দিয়েছে। মানুষের নানা দিক নিয়ে তিনি আলাদা আলাদা চরিত্র তৈরি করেছেন। মানুষের কল্পনাবিলাসী দিক নিয়ে তৈরি করেছেন হিমু। বিশ্লেষণধর্মী দিক নিয়ে তৈরি করেছেন মিসির আলী। আর মানুষের ভেতরকার নিষ্পাপ সত্ত্বাকে নিয়ে তৈরি করেছেন শুভ্র। এছাড়াও প্রতিটা গল্পের চরিত্রই যেনো জীবন্ত।
তার নির্মিত নাটক সমূহও জনপ্রিয় এবং শিল্পর পরিচয় বহন করে। যা আজও মানুষের কাছে দেখার মতো।
ফ্ল্যাপ থেকে-
রুনু বসে আছে ইঞ্জিন বসানো ছোট্ট একটা নৌকার পাটাতনে। পাটাতনে শীতলপাটি বিছানো। শুভ্র পা ছড়িয়ে হাতে ভর দিয়ে অদ্ভুত ভঙ্গিতে আধশোয়া হয়ে আছে। তার দৃষ্টি স্থির না। সে সব কিছুর উপর দিয়ে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। মাঝে-মাঝে হাসিমুখে তাকাচ্ছে রুনুর দিকে। মনজু বসেছে মাঝির কাছে। নৌকায় অল্প অল্প পানি উঠেছে। মনজু অতি ব্যস্ত ভঙ্গিতে সেই পানি তুলে নদীতে ফেলছে।…
ফ্ল্যাপের এই টুকু এবং গল্পের সেই মূহুর্তটুকু কল্পনা করতে সত্যিই অসাধারণ তৃপ্তি দেয়।
প্রচ্ছদঃ
আমার কাছে প্রচ্ছদ তেমন আর্কষণীয় এবং শিল্পময় লাগে নি। পাঠকরা বই পড়ার আগেই প্রচ্ছদ দেখে, তাই গল্প অনুযায়ী প্রচ্ছদ সুন্দর থাকা অতি জরুরি।
প্রচ্ছদটিতে ‘এই শুভ্র এই’ লিখে ক্যালিগ্রাফি করা এবং কিছু পানি ফোঁটা।
ভূমিকাঃ
‘এই শুভ্র এই’ গল্পটি গড়ে উঠেছে শুভ্র ও মনজু’র আলাদা দুটি জগৎ নিয়ে। যেখানে দেখা যায় শুভ্র তার কাল্পনিক চিন্তায় দিন পার করে এবং মনজু সেসব কল্পনা শুনে প্রতিনিয়ত অবাক হয়।
মনজু স্বভাবে একটা ঠকবাজ। কিন্তু জীবনের স্বার্থে তাকে জীবনকে নিয়ে সংগ্রাম করতে হয়।
এটুকুতে ভাবলে দেখা যায়, আমরা প্রতিটি মানুষই শুভ্রের মতো কল্পনা করি এবং মনজুর মতোই জীবনকে নিয়ে সংগ্রাম করি।
গল্পের চরিত্র সমূহঃ
শুভ্র, তার মা জাহানারা বেগম, তার বাবা মোতাহের হোসেন, পোষা কাক কিংকর, নরওয়ের আত্রলিতা, ধড়িবাজ মনজু, বুদ্ধিমতি রুনু, গৃহকর্মী সকিনা।
মূলত এ কয়েকটা চরিত্র নিয়েই ‘এই শুভ্র এই’ গল্পটা শুরু এবং শেষ হয়।
চরিত্র সমূহের সংলাপঃ
গল্পের প্রতিটা চরিত্রই অসামান্য। একটা গল্পে চরিত্র এবং তার থেকে পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক বক্তব্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। চরিত্রের বক্তব্য দ্বারাই একজন পাঠক হাসে এবং কখনও কাঁদে। সেক্ষেত্রে গল্পটির প্রতিটি চরিত্রের বক্তব্য, চিত্রায়ণ এবং পরিস্থিতির দৃশ্যায়ান বেশ ভালো ছিলো।
হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু পরিস্থিতির বর্ণনা বেশি গাঢ় করতে পছন্দ করতেন না। তাই প্রতি গল্পের মতো এই গল্পটিতেও তিনি সহজ সরল ভাবেই গল্পটি লিখে গেছেন। যা পাঠকের বুঝতে সুবিধা হওয়ার পাশাপাশি আকৃষ্ট করে তোলে।
দৃশ্য এবং অনুভূতিঃ
আপনি যদি একটা গল্প পড়ে সেসব মূহুর্ত কল্পনা করতে অক্ষম হন। তাহলে সেটাকে আমি লেখকের ব্যর্থতা হিসেবেই ধরি। হুমায়ূন আহমেদের এ গল্পটি পড়ার সময় আপনি পুরো গল্পটির মাঝেই ঢুকে থাকবেন। মনে হবে আপনি পরিস্থিতি গুলোর এক পাশে দাঁড়িয়ে সব দেখছেন। কখনও আপনার খারাপ লাগবে, কখনও আপনি মুগ্ধ হবেন শুভ্রের বুদ্ধিতে। সবমিলিয়ে দারুণ এক অনুভূতি।
গল্পটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ
শুভ্র ভিন্ন ধরণের কাজ করে, তার চোখ নষ্ট হয়ে যাবে বলে সে বাজনাওয়ালা কিবোর্ড সফটওয়্যার বানিয়েছে। চোখ বন্ধ করে চা-কফিও বানায়, যাতে চোখ নষ্ট হয়ে গেলে তাকে আর সমস্যায় না পড়তে হয়।
গল্পটিতে মনজু’র আগমন ঘটে তৃতীয় অধ্যায়ে। মনজু বসে থাকে শুভ্রর বাবা মোতাহের হোসেনের অফিসে। সে ভদ্রলোকটির জন্য একজন হেডমাস্টারের চিঠি নিয়ে আসে। আর মোতাহের হোসেন তার ছাত্র। চিঠিটিতে হেডমাস্টার মনজুর জন্য কিছু করতে বলে। কিন্তু চিঠিটা ছিল মনজুর ঠকবাজি যা মোতাহের হোসেন ধরে ফেলে। তারপরও সে তাকে শুভ্রকে দেখার জন্য রেখে দেয়।
মনজুর সাথে রুনুর কথা হয় রিকশা ঠিক করা নিয়ে। মনজু আর রনুর সম্পর্ক মামাতো ভাই-বোন। মনজু রুনুর সাথেও তখন কিছু মিথ্যা চাপা মারে এবং রুনু তা ধরে ফেলে। গল্পটিতে রুনুকে বুদ্ধিমতী হিসেবেই ধরা হয়। আর সে তার বুদ্ধির পরিচয় নানাভাবে দেয়।
শুভ্রর মা মনজুকে প্রথম অবস্থাতেই দেখতে পারে নি। তবুও নানা কিছু শিখিয়ে তাকে শুভ্রর ঘরে পাঠায়। শুভ্র তখন মনজুকে একটা ম্যাজিক দেখায়। শুভ্রর কাছে অপরিচিত পরিচিত দুটোই এক। সে সবার সাথেই মিশে যায়। মনজুর সাথে মিশে যায় এবং মনজুও তাকে পছন্দ করে।
শুভ্রর মা জাহানারা বেগম শুভ্রর প্রতি মাত্রাধিক কেয়ারিং। গৃহকর্মী সকিনা শুভ্রর রুম ঝাঁট দিতে গেলে এজন্য সে তাকে নানান আপত্তিকর কথা শুনিয়ে দেয় এবং তাকে শুভ্রর রুমের আশেপাশে ঘোরাঘুরি কম বলতে পারেন। সকিনার প্রতি জাহানারা বেগমের আচরণ খুবই বিশ্রী রকমের লাগে আমার কাছে এবং শুভ্রর প্রতি মাত্রাধিক কেয়ারিং’ও।
শুভ্র নরওয়ের আত্রলিতার সাথে ইন্টারনেটে কিছুক্ষণ কথা বলতো। ঐ সময় সে তার সাথে বিভিন্ন মজার খেলাও খেলে এবং দিনের সুন্দর দৃশ্যগুলো বলে।
গল্পের মাঝ অংশে শুভ্র এবং শুভ্রর বাবা বৃষ্টিতে ভিজে কফি খাচ্ছিলো। শুভ্রর মা তা দেখে খুব কষ্ট পায়, সে ভাবে তাকেও তো তাদের সাথে নিতে পারতেন। তার ধারণা, শুভ্রর বাবা তাকে দেখতে পারে না।
সকিনাদের গ্রামে অচিনবৃক্ষ নামে এক গাছ আছে। সে গাছে যখন ফুল ফোটে তখন তাতে হাত দিয়ে যা চাওয়া হয় তাই নাকি পাওয়া যায়, এ কথাটা শুভ্রকে জানায়। শুভ্র বর্ষায় সেখানে যেতে চায় সকিনাকে সাথে নিয়ে। শুভ্র তার কম্পিউটার এসব লিখে রাখে।
মনজুকে তার মা অভাবের কথা জানায়। মনজু’র এসব শুনতে শুনতে এখন বিরক্ত লাগে। সে চিঠিটার জবাবও লিখে না।
শুভ্রর অপটিক্যাল নার্ভ শুকিয়ে যাচ্ছে। সো অন্ধ হয়ে যাবে শীঘ্রই। তাই সে মনজুকে নিয়ে ঘোরার সিদ্ধান্ত নেয়।
মনজু শুভ্র দুজনে মিলে বুড়িগঙ্গা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। রুনু মানুষের মিথ্যা ধরতে পারে অত্যান্ত বুদ্ধিমতী এসব শুনে শুভ্র তার সাথে সাক্ষাৎ করতে চায়।
রুনু এবং শুভ্রর ফ্ল্যাপের মতো কথায় সাক্ষাৎ হয়। শুভ্র তখন তাকে নানান চমৎকার কথা বলে। শুভ্র তখন তার পোষা কাক সম্পর্কে গল্পটা বলে রুনুকে।
শুভ্রকে সারাদিন না পেয়ে তার মা অস্থির হয়ে পীর সাহেবের নিকট চলে যান এবং কিছুক্ষণ পর জানতে পারে শুভ্র ফিরেছে।
শুভ্র গায়ে জ্বর নিয়ে ফিরে।
গল্পের শেষদিকে মনজুর মা আরেকটি চিঠি লিখে। মনজু বিরক্ত হয়ে সে চিঠির জবাব দেয়।
পরিশিষ্টঃ
মনজুর নাম হচ্ছে শফিকুল করিম। তার ডাক নাম মনজু। রুনু তার মামাতো বোন। মনজু এবং রুনুর সংলাপে প্রেম প্রেম আভাস পাওয়া গেলেও, তা প্রেমময় ছিলো না। শুভ্রর মা শুভ্রকে কোনো মেয়ের সাথে সহ্য করতে পারে না।
বড়লোকদের দেখলে অস্বস্তি লাগে।
পেট বাঁধালে তোমাদের কিছু যায় আসে না। তোমাদের পেট বাঁধিয়ে অভ্যাস আছে। আজকে পেট বাঁধাবে, কাল ফেলে দেবে।
বইটির ভালো দিক এবং কেন পড়বেনঃ
বইটি পড়লে আপনি শুভ্রর কাল্পনিক বিচিত্র জগৎ সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং সেসবের প্রেমে পড়ে যাবেন। শুভ্রর বিভিন্ন ট্রিকস, অদ্ভুত সব প্রশ্ন নিয়ে হাসবেন আবার ভাববেন।
যেমনঃ নদীটার নাম বুড়িগঙ্গা কেন হলো? যুবতীগঙ্গা কেন হলো না?
তবে আমি বলবো শুভ্র সিরিজ পড়ার আগে “শুভ্র” বইটা পড়ে শুভ্রকে জেনে নিন।
ব্যক্তিগত অনুভূতিঃ
রেটিং হিসেবে, ৮.৫/১০
ভেবেছিলাম মনজু’র জীবনে বেশ ট্রাজেডি ক্রিয়েট করা হবে। সেদিক থেকে আমি তেমনটা পাই নি। রুনু এবং শুভ্রকে পুরো গল্পটা জুড়ে বেশ ভালো লেগেছিলো। তবে শুভ্র’র মা’র মাত্রাধিক কেয়ারিং আমার কখনই প্রিয় না। যদিও এটাই তার চরিত্রের ধরণ। সবমিলিয়ে বলা যায় বেশ ভালোই লেগেছে।
মন্তব্যঃ
জীবন থেকে সবকিছু চুরি হয়ে গেলেও,
জীবনের জানা কোনো গল্প চুরি হয় না।
‘এই শুভ্র এই’ বইটি শুভ্র সমগ্রের একটি। শুভ্র সমগ্রে মোট ৬টি বই রয়েছে তার মধ্যে ‘এই শুভ্র এই’ বইটি ৫-নাম্বারে, যা প্রকাশিত হয় ২০০৩ সালে।
এই শুভ্র এই হুমায়ূন আহমেদ pdf download link: Click here to Download ei shuvro ei Pdf