লোকে কী বলবে আয়মান সাদিক | loke ki bolbe book pdf Download
লোকে কী বলবে আয়মান সাদিক pdf Download
বইয়ের নাম : লোকে কী বলবে
লেখকের নাম: আয়মান সাদিক, সাকিব বিন রশীদ
প্রকাশনায়ঃ আদর্শ প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্য: ২৫৫ টাকা
ক্যাটাগরি: অনুপ্রেরণামুলক বই
ফরম্যাটঃ পিডিএফ (Pdf) ফাইল
লোকে কী বলবে আয়মান সাদিক বই রিভিউ:
আয়মান ভাইয়ার এ বইটি পড়ার পর বইটি নিয়ে কিছু কথা না লিখি তাহলে আপনিই বলুন, লোকে কী বলবে! হা হা হা!
বর্তমান আমাদের সমাজের প্রায় প্রত্যেকটি পদেই ১টি কথা খুব প্রচলিত, আর সেটি হচ্ছে “লোকে কী বলবে”। কেউ কোনো ভালো কিছু শুরু করতে গেলে, যেকোনো ভালো কিছুর ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে গেলে, যেকোনো বড় কাজ শুরু করতে গেলে আমাদের প্রায় সবারই মাথায় শুরুতে আসে যদি পদক্ষেপটি সঠিক না হয় , যদি কাজটি সুন্দর করে শেষ না করতে পারি তাহলে লোকে কী বলবে। এমনকি আমি যে এই লেখাটি লিখতে বসেছি আমারো মনে হচ্ছে যে লেখাটি যদি সুন্দর না হয় তাহলে লোকে কী বলবে ।
এই বইটিতে আয়মান ভাইয়া এবং সাকিব ভাইয়া সমাজের লোকের প্রচলিত নানা বলা কথা তুলে ধরেছেন। তারা তুলে ধরেছেন যে লোকের এই বলা কথাগুলো একজনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে ।
তারা লোকের সেই ১০০ রকম কথা তুলে ধরার পাশাপাশি তাতে কান না দেওয়ার ১০১ পদ্ধতিও তুলে ধরেছেন। বইটি পড়ে যে কেউ “লোকে কী বলবে” সেই হীনমন্যতাকে দূর করতে পারবে এবং তার পাশাপাশি অন্যের প্রতি করা নিজের ভুলগুলোও বুঝতে পারবে।
বইটি সত্যি অসাধারণ ছিল❤
** কোনো ভুল হলে সবাই ভুলগুলোকে ক্ষমা-সুন্দর
দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করছি । **
#Ayman_Sadiq #Sakib_Bin_Rashid
রিভিউ:২
বই রিভিউ
আচ্ছা একটা প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু করা যাক, লোকে কী বলবে? এই ভেবে যদি নিজের কাজ না করি তাহলে আসলেই লোকে কী বলবে?
লোকে কী বলবে? বইটিতে লেখকদ্বয় ৩৬ ট্রপিকের মাধ্যমে সমাজের নানাপ্রান্তে ঘটে চলা নানা কটু কথা তুলে ধরেছেন। যে কথাগুলো সহ্য করা যায় না আবার চুপ করেও থাকা যায় না। যে কথাগুলো দাউ দাউ করে হৃদয়ের অন্তঃক্ষরণ শুরু করে দেয়! A+ তো পাইলা না এখন কী করবা?, ছোট মুখে বড় কথা, প্রতিবন্ধীদের মতো করিস কেন?, ওর পা ধূয়ে পানি খাও। তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।
বইয়ের মধ্যে লেখকদ্বয় কখনো কখনো সমাজের কটু কথা গুলো সামলে নেওয়ার বুদ্ধিও বাতলে দিয়েছেন। লোকে কী বলবে তাতে কান না দিয়ে নিজের গতিতে এগিয়ে যাওয়ার আহবান করেছেন লেখকদ্বয়। লোকের কথায় কান না দিয়ে অনেক দূর যাওয়া যায় তার জলজ্যান্ত প্রমাণ লেখকদ্বয় নিজেরাই। নানা কটু কথা সত্ত্বেও এই বইয়ের এক লেখক ‘টেন মিনিট স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেছে যার বর্তমান আর্থিক মূল্য মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। তবে অবশ্যই, নিজের ক্যারিয়ার দিকনির্দেশিকার জন্য কিছু আইডল থাকতে হবে যেমন তারা, মা-বাবা, শিক্ষক কিংবা অন্যকেউ। তবে তার মধ্যে কি বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে তাও বাতলে দিয়েছেন লেখকদ্বয়।
এই বইয়ের মূল অংশ জুড়েই রয়েছে নারী। নারীরা আজ সমাজের নানা প্রান্তে উপেক্ষার স্বীকার পাবলিক বাস থেকে শুরু চারদেয়াল বন্ধী ঘর। বাদ নেয় কর্মক্ষেত্রেও।পাবলিক বাসে যখন নারীরা ইভটিজিংয়ের স্বীকার হয়ে প্রতিবাদ করে তখন আশপাশ থেকে বলে উঠে, চুপ কর, মেয়ে মানুষ এত কথা বলে কেন? এই বাঁধা উপেক্ষা করে নিজের অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে যাওয়া সূর্যসন্তান নারীদের আবির্ভাব কামনা করেছেন লেখকদ্ধয়।
বইয়ের জটিল এক আবেগঘন ট্রপিক, ভাবি কী কিছু করে? – আমার বউ কিচ্ছু করে করে না, হাউজওয়াইফ। অথচ, ঘরে থেকে সেসব নারীরা (মায়েরা) বেতনবিহীন সন্তানের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। মা’দের ঘরের কাজকে অবমূল্যায়ন করা হয় সমাজে। যেন তাদের জন্মই হয়েছে ঘরে থাকা আর সন্তান লালন-পালন করার জন্য। তাদের পরিচয় তারা হাউজওয়াইফ, কিচ্ছু করে না! লেখকদ্বয় মা’দের পেশাকে মিলিয়ন ডলারের সাথে তুলনা করেছেন। তাদের পেশায় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পেশা!
আবার এই বইতে পাশের বাসায় আন্টির জন্যও রয়েছে ফর্মুলা। যার অত্যাচারে ঘুমাইতে পারে না আপনার বাবা-মা। সে অত্যাচারের স্টিম রোলার চলে আপনার উপর দিয়ে, A+ তো পাইলা না এখন কি করবা?, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শুধু টাকা নষ্ট করা, তোকে নিয়ে কত আশা করেছিলাম, পাশের বাসায় আন্টির মেয়েকে দেখছিস, ওর পা দূয়ে পানি খাও!
এই বইয়ের পাতায় পাতায় জুড়েই রয়েছে সমাজের বাস্তব চিত্র। বইটি পড়তে গিয়ে কখনে কখনো আপনার মনে হতে পারে, আরে এটি ত আমার সাথেও হয়েছে! ওম্মা, লেখক তো আমার জীবনের গল্পই বলে যাচ্ছে। ড্যুড, তুমি ইংরেজি পাড় না? মাদরাসার ছাত্র আবার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ে নাকি?, মেয়ে মানুষ বিয়ের পরও চাকরি করে কেন? মেয়ের বাবা-মা ফকির নাকি? বিশ্বাস করেন, এটা শুধু আপনার গল্প নয়, দেশের প্রতিটি মানুষের গল্প। আহরহ ঘটে যাওয়া প্রতিটি মানুষের দৈনন্দিনের ঘটনা এটি।
এই বইয়ের সবচেয়ে দামি লাইন, ” হেরে গিয়ে তুমি থেমে গেলে, এই দেশটার দায়িত্ব নেবে কে?”
পুরো বইটি আমার খুব ভালো লেগেছে। আমার বিশ্বাস দেশের প্রতিটি মানুষের জন্যই বইটি অনুপ্রেরণার বাতিঘর হয়ে আলো জ্বালাবে। পুরো বইতে কিছু ভুল ছিলো তবে তা যৎসামান্য। আশাকরি, আগামিতে লেখকদ্বয় সেদিকে বেশ নজর দিবেন।
যাই হোক, প্রশ্ন হচ্ছে “লোকে কি বলবে” বইটি পড়বেন বইটি? – বলছি তাহলে শুনুন। আপনার নিজের সাথে হয়ত অনেক কিছু ঘটে গেসে। এখন সময় এসেছে নিজেকে শুধরে নিতে যাতে আর কখনো যাতে ভবিষ্যতে আর এমন না হয়। সমাজে নিজের দৃষ্টিতে অন্য কাউকে ছোট ভাবা, সমাজের স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে সবাইকে সচেতন করতে এ বইটি তে অনেক উপদেশ দেওয়া হয়েছে।